২১শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

প্রবাসী আয়ে জোয়ার, ২১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার

চলতি এপ্রিল মাসেও দেশের প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। এ মাসের প্রথম ২১ দিনেই প্রবাসীরা ১৯৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪০ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি।
গত বছর এপ্রিলের প্রথম ২১ দিনে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। রেমিট্যান্স আহরণের চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে তিন বিলিয়ন ডলার আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্যাংকাররা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হুন্ডির ব্যবসা চাঙ্গা ছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর হুন্ডি কমে এসেছে। আবার ব্যাংকিং চ্যানেলেই এখন ডলারের দাম বেশি মিলছে। যে কারণে এখন কেউ ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে দেশে টাকা পাঠাতে চাইছেন না। আড়াই শতাংশ প্রণোদনা আগেও ছিল, এখনো আছে। তাই পাচার ও হুন্ডি কমায় ব্যাংকিং চ্যানেলে বেড়েছে রেমিট্যান্স।
গত বছরের আগস্টে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রতি মাসেই রেমিট্যান্স বাড়ছে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২২২ কোটি ৪১ লাখ ডলার। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২১৯ কোটি ৯৯ লাখ ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। চলতি বছরও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। জানুয়ারিতে এসেছিল ২১৮ কোটি ৫২ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫২ কোটি ৭৬ লাখ ডলার এবং সর্বশেষ গত মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার।
তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসী আয় এসেছে দুই হাজার ৩৭৫ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল এক হাজার ৮৪৭ কোটি ডলার। সে হিসেবে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৮ দশমিক ৬০ শতাংশ।
প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোয় ডলারের যে সংকট চলছিল, তা অনেকটা কেটে গেছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তারা বলেন, ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল, তাও কিছুটা কমে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যেই প্রবাসী আয় কিনছে। এদিকে খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৪ টাকা ৩০ পয়সার মধ্যে।
জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান আমার দেশকে বলেন, ‘রেমিট্যান্স প্রবাহ ধরে রাখতে পারলে প্রতি মাসেই আড়াই থেকে তিন বিলিয়ন ডলার পাওয়া যাবে। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। রিজার্ভ পরিস্থিতি আরো বাড়বে। একইসঙ্গে টাকাকেও শক্তিশালী করতে পারব।’
রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে রিজার্ভও। তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে, এক সপ্তাহ আগে গত ১০ এপ্রিল যা ছিল ২০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার। ফলে গত সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ৪৮ কোটি ৬১ লাখ ডলার। অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ২৬ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার, এক সপ্তাহ আগে গত ১০ এপ্রিল যা ছিল ২৬ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে এক সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ৫৮ কোটি ১৮ লাখ ডলার।
Facebook
WhatsApp
Email
Pinterest
Telegram